লংকাবাংলা ফাইন্যান্স নিয়মিতভাবে তার কার্যক্রম এবং উদ্যোগসমূহের তথ্য সকলের জন্য প্রচার করে থাকে। লংকাবাংলা ফাইন্যান্স এর ওয়েবসাইটটি বিনিয়োগকারীদের জন্য মূলৎ ইনভেস্টর অ্যাওয়ারনেস সুবিধা হিসেবে কাজ করে এবং সকল স্টেকহোল্ডারদের তাদের সুবিধামত লংকাবাংলা ফাইন্যান্স সংশ্লিষ্ট সকল তথ্য প্যাঁতে সহায়তা করে। লংকাবাংলা ফাইন্যান্স পিএলসি এর ডেডিকেটেড ইনভেস্টর রিলেশন পারসোনেলগণ বাজার বিশ্লেষক এবং বিনিয়োগকারীদের উভয়ের কাছে তথ্য প্রদানে সদা সক্রিয় ভূমিকা পালন করে।

মূল্য সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশ নীতিমালা

  • Principles on Disclosure of Material Information & PSI
    মূল্য সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশ নীতিমালা

ইনফরমেশন মেমোরেন্ডাম (আইএম) - বন্ডস

  • LankaBangla Finance PLC. 4th Privately Placed, Non-Convertible, Fully Redeemable, Unsecured Zero-Coupon Bond
    LankaBangla Finance PLC. 4th Privately Placed, Non-Convertible, Fully Redeemable, Unsecured Zero-Coupon Bond
  • IM Zero Coupon Bond
    LankaBangla Finance PLC. Information Memorandum, 3rd Zero-Coupon Bond

বার্ষিক টেকসই প্রতিবেদন

আর্থিক প্রস্তাবনা

শেয়ারহোল্ডারদের জন্য নোটিশ

মূল্য সংবেদনশীল তথ্য

রাইট অফার ডকুমেন্টের সংক্ষিপ্ত সংস্করণ

রাইট অফার ডকুমেন্ট

রাইট শেয়ার অ্যাপ্লিকেশন ফর্ম

ফাইন্যান্সিয়াল হাইলাইটস

লংকাবাংলা ফাইন্যান্স পিএলসি

ফাইন্যান্সিয়াল পজিশন ২০১৭ ২০১৮ ২০১৯ ২০২০ ২০২১ ২০২০ এর তুলনায় ২০২১ এ বৃদ্ধি ৫ বছর CAGR (%)/ গড়* ২০২১
Total Assets 85,443 87,889 84,363 81,835 88,927 8.67% 1.00%
Total Liabilities 77,014 77,954 74,708 71,612 78,053 8.99% 0.34%
Business Disbursement 56,726 38,754 33,666 22,007 34,269 55.72% -11.84%
Property Plant and Equipment 1,803 2,406 2,861 2,777 2,595 -6.57% 9.53%
Current Assets 35,318 44,980 58,403 61,658 63,451 2.91% 15.77%
Current Liabilities 31,959 41,741 56,368 54,511 52,734 -3.26% 13.34%
Net current assets 3,359 3,239 2,035 7,147 10,717 49.96% 33.65%
Non Current Assets 50,124 42,909 25,960 20,178 25,476 26.26% -15.57%
Long Term Liabilities 45,055 36,213 18,340 17,101 25,318 48.06% -13.42%
Loans and Advances 66,544 68,676 65,117 58,472 62,888 7.55% -1.40%
Term Deposits 51,553 53,231 46,751 46,947 47,501 1.18% -2.03%
Total Investment Portfolio 80,800 81,946 78,642 76,249 82,982 8.83% 0.67%
Operational Performance
Operating Revenue 9,981 11,061 11,758 9,690 10,294 6.24% -0.77%
Operating Expenses 2,671 2,770 2,873 2,388 2,874 20.35% -1.81%
Financial Expenses 4,839 6,606 7,275 5,972 4,873 -18.41% -0.18%
Non Interest Revenue 2,905 1,966 1,585 1,543 3,402 120.44% -3.88%
Net Profit Before Tax 2,264 709 725 1,178 1,705 44.74% 7.34%
Net Profit After Tax 1,926 444 508 979 1,306 33.46% 10.21%
EBITDA 7,256 7,315 8,363 7,484 6,861 -8.33% 1.41%
Turnover of Share Trading by LBSL 363,646 235,595 147,526 158,882
Financial Ratios
Gross Profit Ratio 48.48% 59.72% 61.88% 61.63% 47.34% -23.20% 55.81%
Operating Profit Ratio 24.76% 15.24% 13.69% 13.72% 24.74% 80.37% 18.43%
Return on Capital Employed 2.83% 0.56% 0.66% 1.33% 1.76% 31.86% 1.43%
Cash reserve ratio/ liquidity asset ratio (Required 2.5%) 2.92% 2.57% 2.57% 1.59% 1.58% -0.67% 2.25%
Statutory Liquidity Reserve (Required 5%) 5.10% 5.03% 5.04% 5.05% 5.07% 0.39% 5.06%
Capital Adequacy Ratio 11.95% 16.18% 16.75% 18.25% 17.69% -3.07% 16.16%
Gross Non performing assets to gross advances/Non performing loans (assets) to total loans (assets) 2.85% 3.35% 5.20% 4.40% 6.14% 39.62% 4.39%
Cost to Income Ratio 51.95% 62.17% 64.09% 64.24% 53.01% -17.48% 59.09%
Current Ratio 1.11 1.08 1.04 1.13 1.2 6.38% 1.11
Debt Equity Ratio 8.42 7.07 6.9 6.15 6.18 0.54% 6.94
Financial Expense Coverage Ratio 1.51 1.26 1.22 1.22 1.52 24.55% 1.31
Return on Equity (%) 25.66% 4.90% 5.27% 10.02% 12.60% 25.75% 11.69%
Return on Assets (%) 2.58% 0.51% 0.59% 1.18% 1.53% 29.89% 1.28%
Equity Parameters
Authorized Capital 10,000 10,000 10,000 10,000 10,000 0.00% 0.00%
Paid-up Capital 3,183 5,132 5,132 5,388 5,388 0.00% 14.07%
Shareholders' Equity 8,327 9,823 9,482 10,046 10,679 6.29% 6.42%
No. of Share Outstanding 318 513 513 539 539 0.00% 14.07%
Net Asset Value (NAV) Per Share* 15.45 18.23 17.6 18.64 19.82 6.29% 6.42%
Earnings Per Share (EPS) 3.52 0.81 0.94 1.81 2.38 31.46% -9.38%
Market Price Per Share (Closing) 47.8 22.9 18 31.4 37.3 18.79% -6.01%
Price Earnings Ratio (Times) 11.53 26.81 19.25 17.37 15.7 -9.64% 8.02%
Dividend Payment (C- cash & B- bonus) 7.5% B - 5% B - - - -
7.5% C 15% C 7% C 12% C 10%C - -
Profit Per Employee (mn) 1.6 0.37 0.57 1.1 1.7 54.13% 1.51%
Credit Ratings
Long Term AA3 AA3 AA3 AA3 AA3 AA3
Short Term ST-2 ST-2 ST-2 ST-2 ST-2 ST-2

চেয়ারম্যানের
বার্তা

প্রিয় শেয়ারহোল্ডারগণ,

কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি অনুকূলে রয়েছে এবং মহামারীর নেতিবাচক পরিণতি মোকাবেলায় আমাদের প্রচেষ্টা অনেকাংশে সফল হয়েছে। বাংলাদেশ মহামারীর মধ্যেও অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতির লক্ষ্যে কঠোর প্রচেষ্টার মাধ্যমে বিশ্বের কয়েকটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ও স্বীকৃত হয়েছে। গত বছরে প্রাপ্ত এযাববত কালের সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স ফ্লো এবং আরএমজি এর রপ্তানি বাজারের উন্নতি এই অর্থনৈতিক পরিবর্তনের মূল চালিকাশক্তি। যার ফলে সর্বোচ্চ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল।

২০২১ সালে বাস্তবায়িত কৌশলসমূহঃ
কর্মীদের কল্যাণে মনোনিবেশ
২০২১ সালে কর্মীদের কল্যাণকেও অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছিল আগের বছরের মতোই। অফিস প্রাঙ্গনে ন্যূনতম শারীরিক উপস্থিতি সহ কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা ২০২১ সালে কাজের ডুয়াল মডেল অব্যাহত রেখেছি। আমরা কর্মীদের টিকা দেওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত ও সাহায্য করেছি।

কাস্টোমার সার্ভিস ডিজিটালাইজেশন
আমরা গ্রাহকদের সুবিধার্থে আমাদের সমস্ত ডিজিটাল টুল (চ্যাটবট, আপডেট করা ফিনস্মার্ট অ্যাপ, 24/7 গ্রাহক কেন্দ্র এবং আরএম এর সাথে যোগাযোগ) ব্যবহার করতে উৎসাহিত করেছি এবং তাদের সুরক্ষার উপর জোর দিয়েছি। দেশব্যাপী লক ডাউনের মধ্যেও গ্রাহকদের পরিষেবা দেওয়া হয়েছিল।

ব্যবসায়িক পরিচালনা ব্যয়ের র‍্যাশেওনালাইজেশন
আমরা প্রোডাক্টিভিটি এবং কোনো ধারাবাহিকতা বিঘ্নিত না করেই আমাদের অপারেশন এর জন্য ব্যয় অপ্টিমাইজ করতে সক্ষম হয়েছি। খরচ কমানোর পদ্ধতিটি প্রশাসনিক এলাকার জন্য নেওয়া হয়েছিল এবং কোম্পানি জুড়ে সমস্ত ফাংশন থেকে লোকেদের সহায়তায় প্রয়োগ করা হয়েছিল।

নগদ এবং লিকুইডিটি ম্যানেজমেন্ট
কার্যকরী মূলধনের দক্ষ ব্যবস্থাপনা আমাদের আরেকটি উচ্চ অগ্রাধিকারের ক্ষেত্র যা আমরা সতর্কতার সাথে বাস্তবায়ন করেছি। সম্ভাব্য লিকুইডিটি ঝুঁকির বিষয়ে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে, আমাদের সংগ্রহ প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে আমরা আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি কঠোর করেছিলাম। অবশেষে উন্নত ডিপোজিট ম্যানেজমেন্ট স্কিমগুলি নিশ্চিত করার পাশাপাশি বিদেশী তহবিল গ্রহণ করেছি, যা ব্যতিক্রমী ক্রেডিটওর্দিনেস এবং দক্ষ ম্যানেজমেন্ট প্রদর্শন করে।

ব্যাবসায়িক পরিক্ষেত্রে সাসটেইনাবিলিটি নিশ্চিতকরণ
এলবিএফএল সাসটেইনেবল ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে দেশের শীর্ষস্থানীয় আর্থিক পরিষেবা প্রদানকারী হতে চায়। এই দৃষ্টিভঙ্গির সাথে সামঞ্জস্য রেখে, এটি স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার জন্য প্রথম "সাসটেইনাবিলিটি রিপোর্ট" উপস্থাপন করা হয় এবং ফলস্বরূপ, এর স্টেকহোল্ডারদের জন্য দীর্ঘমেয়াদী ভ্যালু ক্রিয়েশন বাড়িয়েছে। এই সাসটেইনেবিলিটি রিপোর্টটি জিআরআই স্ট্যান্ডার্ড ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে।

পুরস্কার এবং স্বীকৃতি
লংকাবাংলা ২০২১ সালে মাস্টারকার্ড ক্রেডিট বিজনেস (অভ্যন্তরীন) এবং মাস্টারকার্ড কন্টাক্টলেস-এ শ্রেষ্ঠত্ব সহ একাধিক পুরষ্কার অর্জনে সফল হয়েছিল। উপরন্তু, শিখা চ্যাটবটের জন্য বছরের সেরা ফিনটেক ইনোভেশন এর জন্য বাংলাদেশ ফিনটেক অ্যাওয়ার্ড 2021-এ সম্মানজনক উল্লেখ পেয়েছে। এর সাথে লংকাবাংলা পেমেন্ট কার্ড ইন্ডাস্ট্রি ডেটা সিকিউরিটি স্ট্যান্ডার্ড (পিসিআই ডিএসএস) পেয়েছে, যার অর্থ হল সংস্থাটি সমস্ত ক্রেডিট কার্ড সুরক্ষা প্রয়োজনীয়তা পূরণ করেছে যা বাংলাদেশের সর্বোপ্রথম এনবিএফআই হিসাবে এই স্বীকৃতি অর্জন।

একনজরে ২০২১ সালে লংকাবাংলা এর পারফর্মেন্স

  • আমরা প্রায় ৩,৪২৬.৯ কোটি টাকা বিতরণ করেছি, যা আগের বছরের থেকে ১,২২৬.৩ কোটি বেশি হয়েছে;
  • বিদেশী তহবিল হতে আমরা ৩৪৮.৭ কোটি টাকা পেয়েছি যা আমাদের আরও শক্তিশালী ক্রেডিটওর্দিনেস প্রদর্শন করে;
  • আমাদের সম্পদের পোর্টফোলিও ৪০৬.৫ কোটি টাকা বেড়ে ৫,৮৭৭.৫ কোটি টাকা হয়েছে, যার মধ্যে বিশেষ অবদান ছিল এসএমই ফাইন্যান্স এর। মোট পোর্টফোলিওর প্রায় ২০১.৭ কোটি টাকা এসএমই ফাইন্যান্স এর অবদান, যা আমাদের কার্যকলাপের বাস্তবোপযোগিতার আরেকটি প্রদর্শন;
  • মহামারীর পর পুঁজিবাজার পুনরুজ্জীবিত হওয়ার কারণে, আমাদের বিনিয়োগের পরিমাণ সূচক পরিমাণে প্রবিধান ফিরিয়ে পেয়েছে এবং পুঁজিবাজারের আয় বৃদ্ধি করেছে; যা আমাদের বর্তমান বাজারের অবস্থাকে অনেকাংশে পুনরুজ্জীবিত করতে সাহায্য করেছে;
  • বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক সম্পদের শ্রেণীবিভাগের উপর ফ্লেক্সিবিলিটি তুলে নেওয়ার কারণে কোম্পানির PAT ৩২.৭ কোটি বেড়েছে যা আগের বছরের তুলনায় ৩৩% বেড়েছে;
  • কনসোলিডেটেড ROE গত বছরের তুলনায় ১০.০২% বেড়ে ১২.৬০% এ এসে দাঁড়িয়েছে;
  • কনসোলিডেটেড ROA গত বছরের তুলনায় ১.১৭% বেড়ে ১.৫৩% এ এসে দাঁড়িয়েছে


২৫ বছরের যাত্রা বিবরণ
স্টেকহোল্ডারদের সবচেয়ে পছন্দের আর্থিক পরিষেবা প্রদানকারী হিসেবে গড়ে তোলা এবং সর্বোচ্চ মূল্যায়ন তৈরী করার লক্ষ্যে সততা বজায় রাখার জন্য লংকাবাংলা সফলভাবে একসাথে বেড়ে উঠেছে। লংকাবাংলা এরই মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ২৫ বছরের পথ প্রশস্ত করেছে। এর স্টেকহোল্ডারদের দৃঢ় সমর্থনে, লংকাবাংলা গ্রাহকদের মাঝে ওনারশিপ বোধ সৃষ্টি, একটি দল হিসেবে বেড়ে ওঠা এবং সততা ও পেশাদারিত্বের সাথে কাজ করার মূল মূল্যবোধে অটল থেকেছে, যা আমাদের যেকোনো ঝড় মোকাবেলা করতে বিশেষভাবে সাহায্য করেছে। এই কঠিন সময়ে কোম্পানির দৃঢ় পারফরম্যান্স সারা দেশে একটি স্থিতিস্থাপক ফ্রাঞ্চাইজি গড়ে তোলার জন্য এক অটল প্রতিশ্রুতির প্রদর্শনী।

ভবিষ্যত পরিকল্পনা
এই প্রতিবেদনটি লিখবার সময়কালে , জ্বালানি গ্যাস এবং গম উৎপাদনকারী ইউরোপীয় দুটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দেশ একে অপরের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত, যার ফলে বিশ্বের অর্থনৈতিক অবস্থা আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। বর্তমান অবস্থার কারণে উপরে উল্লিখিত পণ্যের দাম বৃদ্ধির সাথে, বিদ্যমান মুদ্রাস্ফীতি সঙ্কট আরও জটিল হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। এ কারণে নিষ্পত্তিযোগ্য আয় আরও হ্রাস পাবে এবং জনগণের সঞ্চয় অবস্থার অবনতি হবে।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও চলমান যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট অর্থনৈতিক চাপ অনুভব করতে শুরু করেছে। বিশ্বব্যাপী তেলের মূল্যবৃদ্ধির ফলে দেশের অন্যান্য পণ্যের দাম বেড়েছে, যা ব্যবসার খরচের মাধ্যমে প্রতিফলিত হচ্ছে, অন্যদিকে নিষেধাজ্ঞার কারণে বাংলাদেশ-রাশিয়ার বাণিজ্য সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মহামারীর কারণে, শিপিং খরচ বেড়ে গিয়েছিল, যা যুদ্ধ বিরোধী দেশগুলির কারণে আরও আকাশচুম্বী হয়েছিল। উপরন্তু, আরএমজি রপ্তানিকারকদের খরচ বেড়েছে, যা দেশের রপ্তানির সিংহভাগের জন্য দায়ী। বিশ্বব্যাংক অভ্যন্তরীণ মুদ্রাস্ফীতি এবং ক্রমবর্ধমান আমদানি মূল্য উভয়কে গুরুত্বতার সাথে নজরদারি করার আহবান জানিয়েছে।

২০২২ এর জন্য লংকাবাংলা এর প্রধান কৌশলগুলো হবে:

  • হাব এবং স্পাইক মডেল আরম্ভ করা;
  • ডিসক্রেশনারী ব্যয়গুলোর জন্য আরও অপ্টিমাইজেশন নিশ্চিত করা;
  • সম্পদের মান বৃদ্ধি অব্যাহত রাখা;
  • এসএমই সম্পদের পোর্টফোলিও এর মান বৃদ্ধি অব্যাহত রাখা;
  • অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন সিস্টেম, ফিনস্মার্ট এবং চ্যাটবট ব্যবহার এর মাধ্যমে কোম্পানিকে দ্রুত ডিজিটাল রূপান্তর করা;
  • NPL-এর আরও ভাল ম্যানেজমেন্ট নিশ্চিত করা এবং সেই অনুযায়ী কালেকশন প্রক্রিয়া নিয়মিতকরণ;
  • পুঁজিবাজারের অবস্থাকে কাজে লাগানো, সম্ভাব্য ঝুঁকির কথা মাথায় রেখে বুলিশ প্রবণতাকে অনুকূল করা।


২০২২ সালের জন্য লিকুইডিটি ম্যানেজমেন্ট একটি বিশেষ অব্যাহত প্রক্রিয়া হবে। এর পাশাপাশি, লিকুইডিটি এবং লাভ এর মাঝে যথাযথ লেনদেন নিশ্চিত করা হবে। আমরা রিটেইল দীর্ঘ মেয়াদী ডিপোজিট স্কিমগুলোর প্রতি বিশেষভাবে মনোনিবেশ করবো এবং একইসাথে সরকারী স্টিমুলাস প্যাকেজের অধীনে পুনঃঅর্থায়ন নিশ্চিত করব। লংকাবাংলা-এ আমাদের লক্ষ্য হলো, একসাথে বৃদ্ধি অব্যাহত রাখা এবং সকল শেয়ারহোল্ডারদের লাভ নিশ্চিত করা।

বর্তমানের পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে, বিস্তৃত শিল্পের মধ্যে সমাধানের অংশ হিসাবে আমাদের ভূমিকা পালন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাজার এবং সামাজিক সমস্যাগুলোর প্রতি সাড়া দেওয়া, আমাদের গ্রাহকদের, কর্মচারীদের এবং সমাজের বর্তমান এবং ভবিষ্যত ভিত্তি শক্তিশালী করতে সহায়তা করা এবং আমাদের সমস্ত স্টেকহোল্ডারদের জন্য ভ্যালু তৈরি করা হল গ্রোয়িং টুগেদার-এর গাইডিং নীতি! আমি নিশ্চিত যে একটি জাতি হিসাবে বিভিন্ন ফ্রন্টে ভাল এবং খারাপের মধ্য দিয়ে আমরা যে শিক্ষাগুলো অর্জন করেছি এবং ২০২১ সালে ভঙ্গুর অর্থনৈতিক অবস্থার বিষয়ে আমরা যে ইনসাইট গুলো পেয়েছি তা আমাদের ২০২২ সালে আরও ভাল কাজ করতে সক্ষম করবে।



ধন্যবাদান্তে,
মোহাম্মদ আ. মোমিন
চেয়ারম্যান

"২০২১ সাল পুরো বিশ্ব সমাজের জন্য ছিলো এক লিট্মাস টেস্ট যা জনসমাজের জন্য ছিল অভূতপূর্ব। লংকাবাংলার জন্য এ সময় ছিল দুটি বিকল্পঃ উন্নয়ন কিংবা অস্তিত্ব হ্রাস। আমাদের সাফল্যের মূলমন্ত্র হিসেবে ছিল আমাদের মূল্যবোধ, অন্তর্শক্তি যা আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক দীক্ষার মাঝে অন্তর্নিহিত। আমরা এখন আমাদের নিজস্ব প্রক্রিয়া, কার্যক্ষমতা এবং গ্রাহককেন্দ্রিকতাকে ধরে রেখে পরবর্তী বড় পদক্ষেপের জন্য প্রস্তুত।"

ব্যবস্থাপনা পরিচালকের
রিভিউ এবং স্টেটমেন্ট

মহামারীর প্রতি দুই বছরব্যাপী পুরো বিশ্বের প্রতিক্রিয়া, আমাদের জীবনে অনুপ্রেরণাদায়ক এক প্রভাব ফেলেছে। এ প্রভাব আমাদের কোম্পানির কার্যক্রম এবং ফলাফলে সারা বছর জুড়ে প্রতিফলিত হয়েছে।
আমাদের কোম্পানির সকল কর্মী এবং সিস্টেমগুলো মহামারীর এ যুদ্ধে পরীক্ষিত হয়েছে এবং এই মহামারীর ফলস্বরূপ যে কোনও প্রতিযোগিতামূলক হুমকি এবং বাহ্যিক বাঁধার মুখোমুখি হওয়ার জন্য আরও ভালভাবে প্রস্তুত। এটি আমাদের অভ্যন্তরীণ সম্পর্ককে আরও মজবুত করেছে, সহযোগিতার পথ খুলে দিয়েছে এবং আমাদের স্টেকহোল্ডারদের আশ্বস্ত করেছে যে আমাদের কর্মীরা যে কোনো পরিস্থিতিতে কোম্পানির উন্নয়নে অবদান রাখতে সক্ষম। আমাদের দীর্ঘ মেয়াদী সাসটেইনাবিলিটি এবং সম্মিলিত সমৃদ্ধির বজায় রাখার জন্য আমাদের বিশ্বাস এটাই আমাদের সর্বোত্তম অঙ্গীকার।

প্রিয় স্টেকহোল্ডারগণ,

এবছর লংকাবাংলার ২৫ তম বার্ষিক প্রতিবেদনের মূল প্রতিপাদ্য আলোচনায় চলে আসে বিভিন্ন প্রতিকূল পরিস্থিতির মাঝেও “একসাথে বেড়ে ওঠার গল্প”। এর জন্য আমাদের প্রতি সকল ব্যবসায়িক অংশীদার, গ্রাহক, নিয়ন্ত্রক, সরকার এবং সর্বোপরি সমাজের অটল সমর্থনের জন্য আমরা বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ।

মহামারীর পুনরাবৃত্তি, মানুষের অকল্পনীয় দুর্ভোগ কাটিয়ে ওঠার প্রচেষ্টা, অর্থনীতির উন্নতির পথে ফিরে আসার চেষ্টা সহ, সামগ্রিকভাবে, ২০২১ মিশ্র অভিজ্ঞতার একটি বছর। আমরা লংকাবাংলায়, সফলতা নিশ্চিত করতে এবং অনিয়মিত অর্থনৈতিক অবস্থা মোকাবিলা করার জন্য কঠোর পন্থা বাস্তবায়নের পাশাপাশি, রাজস্ব এবং আয়ের পাশাপাশি, আমাদের স্টেকহোল্ডারদের স্বাস্থ্য, চাহিদা এবং নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকি।

২০২১ -এ আমরা সকল সহযোগী সংস্থাগুলোর জন্য, যে লক্ষ্যগুলো নির্ধারণ করেছিলাম, তা সামগ্রিকভাবে দক্ষতা এবং প্রচেষ্টার সাথে বাস্তবায়ন করতে আমরা সফল হয়েছি। বিভিন্ন কার্যকরী রোটেশন এবং সম্মিলিত নিরলস প্রচেষ্টার মাধ্যমে হিউমান ক্যাপিটালকে পুনর্গঠন ও শক্তিশালী করা, রিটেইল এবং এসএমই -এর বৃদ্ধি এবং আইটি সমর্থন দ্বারা, সম্ভাবনাময় পুঁজিবাজারকে কাজে লাগানো, অসামান্য কর্মক্ষমতা এবং প্রাথমিকভাবে অ্যাসেট পোর্টফোলিওর সমৃদ্ধি, এসবই আমরা আমাদের সাফল্যের গল্পের অন্তর্ভুক্ত।

২০২১ সালে আমাদের অপারেটিং এনভায়রনমেন্ট

২০২০ সাল থেকে মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াই করার অভিজ্ঞতা এবং জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে জীবনকে স্বাভাবিক করার জন্য এবছর ২০২১ সালে পুরো বিশ্ব বিপর্যয়কর মহামারীর সেকেন্ড ওয়েভ এর সময়, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে, প্রচেষ্টা চালিয়েছে। বিস্তৃত টিকাদান কর্মসূচী মানুষকে ঘর থেকে বের হয়ে নিজ নিজ কার্যকলাপে অংশগ্রহণ করার আস্থা দিয়েছে। মহামারীর অর্থনৈতিক বিরূপ প্রভাব নির্মূল করতে সরকারের রেকর্ড ১৮৯৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের আর্থিক প্যাকেজ, উল্লেখযোগ্য রেমিট্যান্স আয় এবং রপ্তানি বাজার পুনরুদ্ধার ২০২১ সালে ক্রমবর্ধমান বাংলাদেশের অর্থনীতিকে নতুন সম্ভাবনা দিয়েছে। এ সকল প্রচেষ্টা অর্থনীতির স্থিতিশীল পুনরুদ্ধারে সহায়তা করেছে।

অন্যান্য অর্থনৈতিক প্রতিকূলতার সাথে লড়াই করে, বাংলাদেশ প্রকৃত জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬.১% অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে যা আগের বছরের (৫.২%) তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। এমনকি মহামারী চলাকালীন, আমাদের জিডিপি, আমাদের অনেক প্রতিবেশী দেশের জিডিপিকে ছাড়িয়ে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের দ্বিতীয়ার্ধে দেশের অর্থনৈতিক মন্দা থাকা সত্ত্বেও, আমরা গত বছরের ২১.৭৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রেকর্ড ছাড়িয়ে, ২২.০৭ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স রেকর্ডও অর্জন করেছি যা আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ $৪৬,১৫৩.৯০ মিলিয়ন তৈরীতে ব্যাপকভাবে অবদান রেখেছে। বিভিন্ন পণ্য সামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধির পরেও,আরএমজি সেক্টরের অসামান্য কর্মক্ষমতা রপ্তানি আয়ে একটি উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ঘটায়। দেশের রপ্তানিকারকদের সহায়তার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের পরিমাণও বৃদ্ধি করে যা কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স এরও বৃদ্ধি ঘটায়।

অর্থনীতি পুনরায় চালু হওয়ার পর, বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে উল্লেখযোগ্য পারফরম্যান্স লক্ষ্যনীয়, যা র‌্যাঙ্কিং- এ দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষস্থানীয় পারফরম্যান্স মার্কেটগুলোর মধ্যে একটি, এর প্রধান মার্কেট ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ যা গত বছরের তুলনায় ২৫.০৮ শতাংশ বেড়ে ২০২১-এ ৬,৭৫৬.৬৫ পয়েন্টে অর্জন করে। ডিএসইএক্স ১০ অক্টোবর, ২০২১-এ রেকর্ড সর্বোচ্চ ৭,৩৬৭ পয়েন্টে পৌঁছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে মোট সিকিউরিটিজ লেনদেনের সংখ্যা ২০২০ সালের ৫৯৭ থেকে বেড়ে ২০২১ সালে ৬১৬ হয়েছে। ডিএসইএক্স-এর মার্কেট ক্যাপিটালও সর্বকালের সর্বোচ্চ ৫,৮৬,৩০০ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। তাই, এলবিএফএল-এ আমরা সামগ্রিকভাবে আমাদের প্রফিট অর্জনে এই বছর বিয়ারিশ ক্যাপিটাল মার্কেটকে কাজে লাগাতে পেরেছি।

লংকাবাংলা এবং আমাদের দেশের একটি উল্লেখযোগ্য বাধা ছিল, অসম্ভাব্য অর্থনৈতিক অবস্থা এবং সামগ্রিকভাবে এর প্রভাব মোকাবেলা করা। একটি স্বচ্ছ ধারণার জন্য, আমাদের ভিন্নধর্মী পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। আমরা এ সমস্যা থেকে বের হতে সক্ষম হয়েছি এবং আমাদের প্রাথমিক আয়ের উৎসগুলোর উপর ফোকাস করে, পুঁজিবাজারের অবস্থাকে কাজে লাগিয়ে, সামগ্রিকভাবে একটি সফল সংস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পেরেছি।

কোভিড-১৯ এর সম্পর্কিত চলমান নিয়মকানুন যেমন- সীমিত চলাচল এবং ব্যাপক শাটডাউনের মতো অবস্থা থাকা সত্ত্বেও,আমাদের মার্কেট লিকুইডিটি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলশ্রুতিতে, মানুষের জীবনযাত্রার অবস্থা উন্নত হয়েছে। সাধারণ মানুষের লোন নেবার প্রবণতাও এর সাথে বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বছরের শিথিল নীতির উপর ভিত্তি করে, নির্দিষ্ট কিছু শ্রেণির লোনের উপর অতিরিক্ত বিধান জারি করে, বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২১ সালের শেষ দিকে, সম্পদের শ্রেণীবিভাগের সীমা তুলে নেয়। এর মাধ্যমে, ২০২১ সালে লোন এবং অগ্রিমের জন্য প্রভিশন চার্জ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায় যা গত বছরের তুলনায় আমাদের আর্থিক ফলাফলকে প্রভাবিত করে।

অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর ফলে মানুষ আরও আশ্বস্ত হতে পেরেছে এবং তাদের সামগ্রিক কনসাম্পশন বৃদ্ধি পায়, সেই সাথে তাদের ক্যাশ ডিসবার্সমেন্টের বৃদ্ধি ঘটে। আগের বছরে, আমাদের মূল ফোকাসগুলোর মধ্যে একটি ছিল কঠোর পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি নিয়মিত ভিত্তিতে সংগ্রহ নিশ্চিত করা। একারণে সম্পদের গুণমান বজায় রাখতে আমরা সক্ষম হতে পেরেছি। বিচক্ষণ কৌশল বাস্তবায়নের মাধ্যমে, আমরা আমাদের সংগ্রহ প্রক্রিয়ায় ২০২০ সালের তুলনায় ৮.৫৩% বৃদ্ধি অর্জন করেছি। ২০২০ সালের চেয়ে গ্রুপ নেট মুনাফা ৩৩% বৃদ্ধি, গ্রুপ এবং স্ট্যান্ডালন ক্যাপিটাল এডিকুয়েসির অনুপাত (সিএআর) যথাক্রমে ১৭.৮০% এবং.১৬.৮৯% হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত ১০% সিএআর-এর প্রয়োজনীয়তা পূরণ, আমাদের সফল ব্যালেন্স শীট এবং ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি অফ বাংলাদেশ (সিআরএবি) দ্বারা রেটেড দীর্ঘমেয়াদী ক্ষেত্রে "AA3" ক্রেডিট রেটিং এবং স্বল্পমেয়াদী জন্য "ST-2" ক্রেডিট রেটিং, লংকাবাংলা গ্রুপের বিশেষ প্রচেষ্টা এবং কৌশলগত তৎপরতাকেই প্রদর্শন করে।

বছর শেষের হাইলাইট- ২০২১

বেসরকারী এবং সরকারী যৌথ প্রচেষ্টা, সরকারী অনুদান এবং বিদেশী রেমিট্যান্সের মাধ্যমে স্বাস্থ্য ও অর্থনীতিতে মহামারীর প্রভাব কমেছে এবং আমরা ২০২১ সালে সাফল্যের পথ দেখেছি এবং লিকুইডিটির উন্নত অবস্থা ব্যবসায়িক এবং ভোক্তার সামগ্রিক কনসাম্পশন বৃদ্ধি করে, ফলস্বরূপ, তাদের লোনের প্রবণতাকেও বৃদ্ধি করে।

২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে ৩৪,২৬৯.২৯ মিলিয়ন টাকা ডিসবার্সমেন্টের মাধ্যমে, আমাদের অ্যাসেট পোর্টফোলিও ২০২০ সালের ৫৪,৭০৯ মিলিয়ন টাকার তুলনায় ২০২১ সালের শেষে ৭.৪৩% বৃদ্ধি পেয়ে ৫৮,৭৭৫ মিলিয়ন টাকায় পৌঁছেছে। এটি ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে আমাদের ফি ২৩% বৃদ্ধি করতে সহায়তা করেছে। ২০২১ সালে, আমরা যথাযথ মার্জিন বজায় রাখা, অ্যাসেট ক্লায়েন্ট ধরে রাখা, প্রতিযোগীদের দ্বারা টেক ওভার, স্বল্প ব্যয়ের তহবিল সংগ্রহ করা যার ফলস্বরূপ আমাদের নেট ইন্টারেস্ট আয় ৭% কমে গেছে, এমন অনেক তীব্র প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হয়েছি। ডিসবার্সমেন্টের মাধ্যমে প্রাপ্ত ফি এর আয়, অপ্টিমাইজড অপারেশনাল খরচ, বিয়ারিশ ক্যাপিটাল মার্কেটের যথাযথ ব্যবহার আমাদের লাভজনক মুনাফায় অবদান রেখেছে।

মহামারীর কারণে সৃষ্ট অস্থিতীশীল অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মাঝে আমরা পুরো বছর জুড়ে ব্লুঅরচার্ড মাইক্রোফাইন্যান্স ফান্ড, হেলদিয়ার লাইফ ডিএসি ফর ফাইন্যান্সিং এবং রেসপন্সঅ্যাবিলিটি ইনভেস্টমেন্টস এজি হতে মোট ৩৪৮.৭ কোটি টাকার ফরেন টার্ম লোন পেয়েছি। প্রতিটি লোন এর টেনিউর ৫ বছর। প্রাপ্ত লোনগুলো বর্তমান অস্থিতীশীল পরিস্থিতির মধ্যেও আমাদের ক্রেডিটওর্দি হিসেবে তুলে ধরে।

লংকাবাংলায় আমাদের প্রতি ডিপজিটরদের আস্থা এবছর আরও দৃঢ় হয়েছে। আমাদের রিটেইল টার্ম ডিপোজিটের পরিমান ছিল এবছর ২১৮৫.২১৯ কোটি টাকা যা ছিলো সর্বোপরি মবিলাইজেশনের ৫১.০৮%। আমরা পূর্বে ইস্যুকৃত জিরো কুপন বন্ড সহ অন্যান্য আর্থিক প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে সক্ষম হয়েছি। এই বছর আমাদের উল্লেখযোগ্য ক্রেডিট রেটিং এর মাধ্যমে আমাদের ব্যাংক লোনের পরিমান বৃদ্ধি পেয়েছে, যা প্রমান করে, দীর্ঘ মেয়াদী লোনদাতাদের সাথে আমাদের শক্তিশালী প্রফেশনাল সম্পর্ক।

২০২১ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশ অনুযায়ী, ১৫% ফেরত দেওয়া আনক্লাসিফাইড লোনের বিপরীতে ২% প্রভিশন চার্জ করার কারনে, লোন এবং লিজের জন্য, আমরা উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভিশনাল বৃদ্ধি লক্ষ্য করেছি। আমাদের অ্যাসেটের গুণগত মান নিশ্চিত রাখতে কঠোর পর্যবেক্ষণ করেছি। এছাড়াও অর্থের কালেকশন ধারাবাহিক রাখার জন্য বিভিন্ন ক্যাম্পেইন চালিয়েছি। আমাদের কালেকশন এবং মনিটরিং প্রক্রিয়া পুনর্গঠন করার মাধ্যমে আমরা আমাদের নিজ ক্ষেত্রে নিয়োজিত কর্মীদের মাধ্যমে অভারডিউ এর ফলোআপ এবং ওভারডিউ থেকে কালেকশন নিশ্চিত করেছি। এর কারনে আমরা অ্যাসেট শ্রেণীবিভাগের উপর ক্যাপ তুলে নেওয়ার পরেও গত বছরের স্বতন্ত্র ৪.৭০% এনপিএল হার এর তুলনায় এ বছর ৬.৫৭% এ উন্নীত হতে সক্ষম হয়েছি।

আমরা লংকাবাংলায় ২০২০ সালে অস্থিতিশীল অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে ৭৮ জন নতুন কর্মী নিয়োগ করেছিলাম তবে এবছর ৩১৭ জন নতুন কর্মী নিয়োগের মাধ্যমে আমরা আমাদের সার্বিক বৃদ্ধি বজায় রেখেছি। আমাদের প্রতি শেয়ারহোল্ডারদের অটুট বিশ্বাস এবং এর সাথে সকল স্টেকহোল্ডারদের স্বার্থ ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করার মাধ্যমে আমরা গত দুই দশক ধরে কোম্পানী হিসেবে আমাদের খ্যাতি অর্জন এবং রক্ষা করতে পেরেছি।

আমাদের কলসেন্টার গুলো নিরলসভাবে কাজ করার মাধ্যমে গ্রাহকদের নিরাপত্তা প্রদানে সক্ষম হয়েছে। আমাদের কলসেন্টার গুলো ২০২০ সালের তুলনায় ১৩,১৮০ টি অধিক কল গ্রহণ করেছে এবং তাদের প্রচেষ্টার ফলস্বরূপ ২১৫ জন নতুন গ্রাহক পেয়েছে। যার ফলে গ্রাহক সন্তুষ্টি স্কোর ৯১.৬৬ শতাংশ এবং কল কোয়ালিটির স্কোর ৮৬.৬৭ শতাংশ হয়েছে। ২০২১ সালে লংকাবাংলা ফাইন্যান্স মোট ৮১ টি ট্রেইনিং প্রোগ্রাম আয়োজন করে যার বেশিরভাগই ছিলো ই-লার্নিং কেন্দ্রিক।

লংকাবাংলা ফাইন্যান্স পিএলসি ২০২০ সালে, ইনস্টিটিউট অফ চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অফ বাংলাদেশ (আইসিএবি) আয়োজিত ২১ তম আইসিএবি জাতীয় পুরস্কারে সেরা বার্ষিক প্রতিবেদনের জন্য কর্পোরেট গভর্ন্যান্স ডিসক্লোজার বিভাগে যৌথভাবে প্রথম স্থান অর্জন করেছে। ইন্টিগ্রেটেড রিপোর্টিং ক্যাটাগরিতে লংকাবাংলা ফাইন্যান্স দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে এবং ২০২০ সালে সেরা উপস্থাপিত বার্ষিক প্রতিবেদনের জন্য আর্থিক পরিষেবা সেক্টর বিভাগে মেরিট ভিত্তিক সার্টিফিকেট অর্জন করেছে। লংকাবাংলা ফাইন্যান্স পিএলসি কর্পোরেট গভর্নেন্সের জন্য সার্ক বার্ষিকী পুরস্কারে প্রথম রানার আপ পজিশনও অর্জন করেছে এবং সাউথ এশিয়ান ফেডারেশন অফ অ্যাকাউন্ট্যান্টস কর্তৃক প্রদত্ত ২০২০ সালের ইন্টিগ্রেটেড রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ডে দ্বিতীয় রানার আপ স্বীকৃতি লাভ করেছে। এছাড়াও, এলবিএফএল আইসিএমএবি সেরা কর্পোরেট পুরস্কার ২০২০ পেয়েছে। এই পুরষ্কার এবং অর্জনগুলো স্বচ্ছতা এবং সততার পরিপ্রেক্ষিতে স্টেকহোল্ডারদের প্রতি আমাদের ধারাবাহিক দায়বদ্ধতা তুলে ধরেছে।

ফাইন্যান্সিয়াল হাইলাইটস
ডিসবার্সমেন্টের পরিমাণ বৃদ্ধি, বর্ধিত ফি আয়, পুঁজিবাজারের যথাযথ ব্যবহার এবং পরিচালন ব্যয়ের অপ্টিমাইজেশন আমাদের কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অর্জনে অবদান রেখেছে এবং আমাদের প্রতি স্টেকহোল্ডারদের আস্থা বজায় রাখতে সাহায্য করেছে।

আমাদের সম্মিলিত নেট মুনাফা ১৩০.৫ কোটি টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে যা ২০২০ সালের তুলনায় ৩৩% বেশি, ২০২১ সালে আমাদের স্ট্যান্ডঅ্যালোন নেট প্রফিট ছিল ৬০.৯ কোটি টাকা। বর্তমানে, ২.৩৮ টাকা গ্রুপ ইপিএস এবং ১.১৩ টাকা স্বতন্ত্র ইপিএস যা ২০২০ সালে যথাক্রমে ১.৮১ এবং ১.৫৩ টাকা ছিল। রিটার্নের বৃদ্ধিতে আমাদের প্রচেষ্টা প্রতিফলিত হয়েছে। ২০২১ সালে সম্পদের উপর রিটার্ন এবং ইক্যুইটির উপর রিটার্ন ছিল ১.৫৩% এবং ১২.৬০% যা ২০২০ সালে যথাক্রমে ১.১৭% এবং ১০.০২% ছিল৷ ২০২১ সালে আমাদের স্ট্যান্ডালন রিটার্ন অন অ্যাসেট ছিল ০.৭৬% এবং রিটার্ন অন ইক্যুইটি ছিল ৫.৬৬%।

আমরা সুযোগের পূর্ণ সদ্ব্যবহার করেছি এবং বিনিয়োগের মূল্য হ্রাসের জন্য, চার্জ করা বিধানের উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সাথে বিনিয়োগ আয়ে ২৮৬% বৃদ্ধি সহ বিয়ারিশ পুঁজিবাজারকে কাজে লাগিয়েছি। ২০২১ সালে পুনঃস্থাপিত একত্রিত এনএভি ছিল ১৮.৬৪ টাকা থেকে ১৯.৮২ টাকা, এবং ২০২০-এ পুনঃস্থাপিত পৃথক এনএভি ছিল ১৯.৩৯ টাকা যা পরবর্তীতে ৫.৯৯% বৃদ্ধি পেয়ে ২০২১ সালে পৃথক এনএভি ২০.৫৫ টাকায় পৌঁছেছে।


অন্যান্য প্রধান হাইলাইট নিম্নে তুলে ধরা হল-

  • রেভিনিউ

    বিধানে শিথিলতা তুলে নেওয়ার ফলে এবং ইন্টারেস্ট সাসপেন্সে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধির কারণে (৪০%), আমাদের নেট ইন্টারেস্ট আয় ৭% কমে ২০১.৯ কোটি টাকায় পৌঁছেছে, যা ২০২০ সালে ছিল ২১৭.৪ কোটি টাকা। এ স্বত্বেও আমরা মোট রেভিনিউতে ৬.২৪% বৃদ্ধি এবং মোট অপারেটিং আয়ের উপর ৪৬% বৃদ্ধি লাভ করেছি। বিনিয়োগ, কমিশন, লোন এবং টেকওভার লোন থেকে প্রাপ্ত আয়, অন্যান্য অপারেটিং আয়ের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ, এবং বুলিশ পুঁজিবাজারের সুযোগকে কাজে লাগানোর মাধ্যমে আমাদের আয় ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে।

  • লাভ

    আমাদের অপারেটিং খরচ আগের বছরের তুলনায় ২০% বৃদ্ধি পেয়েছে যা আমরা আমাদের পুঁজিবাজার পরিস্থিতির উন্নতি, দেশীয় প্রতিদ্বন্দী আর্থিক সংস্থান গুলোকে ছাড়িয়ে যাওয়া এবং যথাযথভাবে কার্যক্রম পরিচালনার মাঝে দেখতে পাই। ২০২১ সালে বর্ধিত প্রভিশনিং বিধানের কারণে, সম্পদের গুণমান কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয় বিশেষ করে কোভিড-১৯ মহামারীর ফলে অনেক এসএমই গ্রাহক এবং সম্ভাব্য কর্পোরেট ক্লায়েন্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এইভাবে এনপিএল, এক বছর আগে ৪.৭০% থেকে ৬.৫৭% বেড়েছে।

  • লাভ

    এর ফলশ্রুতিস্বরূপ আমরা প্রভিশনাল ৪৫.৪ কোটি টাকা আয় করতে সমর্থ হয়েছি। আমরা মার্জিন লোনের বিপরীতে ১২.৫ কোটি টাকার অতিরিক্ত প্রভিশন বজায় রাখতে পেরেছি। অন্যদিকে, আমরা আগের বছরের তুলনায় বিনিয়োগের পরিমাণ ৭৩% হ্রাস করার প্রভিশনও কমাতে সক্ষম হয়েছি। যদিও আমরা মোট অপারেটিং ইনকাম এর ৪৬% প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছি, আমরা ওপেক্স এবং প্রভিশনিং বৃদ্ধির কারণে ট্যাক্স পরবর্তী লাভে (পিএটি) এর ৩৩% বৃদ্ধি ধরে রাখতে পারি।

  • পোর্টফোলিও

    যেহেতু বাজারে লিকুইডিটি বজায় ছিল এবং সময়ের সাথে জীবনযাত্রার অবস্থার উন্নতি হয়েছে, তাই পরিস্থিতি আমাদের অনুকূলে ছিলো, আমাদের সম্পদ পোর্টফোলিও ৭.৪৩% বৃদ্ধি পেয়ে ২০২১ সালে ৫৮৭৭.৫ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে, যা ২০২০ সালে ছিল বিডিটি ৫৪,৭০৯ মিলিয়ন। এটি আমাদের ডিসবার্সমেন্টে সহায়তা করেছে, যা ২০২০ সালে ২২০০.৭ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ৩৪২৬.৯ কোটি টাকা হয়েছে।

  • পোর্টফোলিও

    ২০২১ সালে রিটেইল সেগমেন্টে আমাদের ডিসবার্সমেন্টের অবদান ছিল মোট ডিসবার্সমেন্টের ৪৩.৫৯% এর বেশি। আমাদের রিটেল ফাইন্যান্সিং ডিসবার্সমেন্টের মূল ক্ষেত্র ছিল ক্রেডিট কার্ড, যা সকল রিটেইল ফাইন্যান্সিং ডিসবার্সমেন্টের ৭৪.১৫%। রিটেইল ফাইন্যান্সের পাশাপাশি, আমাদের পুরো এসএমই পোর্টফোলিওটি, সামগ্রিক অ্যাসেট পোর্টফোলিওর ভাল পারফরম্যান্সে একটি উল্লেখযোগ্য অবদানকারী হিসেবে কাজ করেছে। এসএমই এর অবদান মোট সম্পদ পোর্টফোলিওর প্রায় ৩৩.৫১%, যা ২০২০ সালে ৩২.৩১% ছিল।

  • ক্রেডিট কোয়ালিটি এবং এনপিএল

    কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লোন প্রদানের মানদণ্ডের ফলে, আমাদের সম্পদের মান আগের বছরের তুলনায় কিছুটা কমেছে। আমাদের স্ট্যান্ডালন এনপিএল অনুপাত এখন দাঁড়িয়েছে ৬.৫৭%, যা আগে ছিল ৪.৭০%। যদিও গুণমান হ্রাস পেয়েছে, আমাদের কালেকশন পলিসি উন্নত করার জন্য আমাদের ক্রমাগত প্রচেষ্টা ফলপ্রসূ হয়েছে, এবং অর্থনৈতিক অর্জন গুণমান পতনের ক্ষতিপূরণকে ছারিয়ে গিয়েছে।

  • লিকুইডিটি এন্ড ক্যাপিটাল রেসিও (সিএআর)

    ২০২১ সালে লিকুইডিটি এন্ড ক্যাপিটাল রেশিও (সিএআর) গ্রুপ ভিত্তিতে ১৭.৮০% এবং স্বতন্ত্র ভিত্তিতে ১৬.৮৯% ছিল, বাংলাদেশ ব্যাংকের ন্যূনতম ১০% সিএআর-এর থেকে বেশি ছিল যা প্রমান করে যে কোম্পানি যে কোনো প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে সক্ষম যেমনটি বিগত কয়েক বছর ধরে করে এসেছে।

  • শেয়ার পারফরমেন্স

    আমাদের শেয়ারের বাজার মূল্য সারা বছর ধরে ওঠানামা করেছে এবং লকডাউনের সময়, এটি ২৪.৯ টাকায় নেমে গিয়েছিল যেখানে, বছর শুরুতে শেয়ার মূল্য ৩২.৭০ টাকা। অবশেষে, ২০২১ সালের শেষের দিকে ডিএসই এবং সিএসই উভয় ক্ষেত্রেই বাজার মূল্য ৩৭.৩০ টাকায় স্থির হয় যা ১৪% বার্ষিক রিটার্ন নিশ্চিত করে।

  • রিটার্ন অন অ্যাসেট (আরওএ)

    ২০২১ সালে, স্বতন্ত্র আরওএ ০.৭৬% এবং কনসোলিডেটেড আরওএ ১.৫৩% এ দাঁড়িয়েছে।

  • রিটার্ন অন ইকুইটি (আরওই)

    ২০২১ সালে, স্বতন্ত্র আরওই ছিল ৫.৬৬%, এবং কনসোলিডেটেড আরওই ছিল ১২.৬০%।

  • আরনিং পার শেয়ার (ইপিএস)

    ২০২১ সালের লংকাবাংলার স্বতন্ত্র ইপিএস ছিল ১.১৩ টাকা যা ২০২০ সালে ছিল ১.৫৩ টাকা। ইতিমধ্যে কনসোলিডেটেড ইপিএস ২০২০ সালে ১.৮১ টাকার বিপরীতে ২০২১ সালে ২.৩৮ টাকায় বেড়েছে।

  • ফান্ড আন্ডার ম্যানেজমেন্ট

    ২০২১ সালে অ্যাসেট ডিসবার্সমেন্ট এবং ব্যাংক লোনের বৃদ্ধির কারণে, ব্যবস্থাপনার অধীনে তহবিল ৭% বৃদ্ধি পেয়েছে, যা আগের বছরের ১৪৪,৭৭৭ মিলিয়ন টাকা থেকে বেড়ে ১৫৪,৯৮২ মিলিয়ন টাকা হয়েছে। এই বৃদ্ধি এই কঠিন সময়ে আমাদের সম্পদ ব্যবস্থাপনায় দৃঢ়তার উদাহরণ দেয়।

সহায়ক সংস্থার কার্যক্রম:
৪২৩ এবং ২২৬ নং পৃষ্ঠায় যথাক্রমে সহায়ক সংস্থাগুলোর বিশদ কার্যকলাপ এবং কার্যকারিতা উল্লেখ করা হয়েছে।

কম্যুনাল এংগেজমেন্ট
আমরা বিশ্বাস করি যে, সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের প্রতি আমাদের দায়িত্ব রয়েছে এবং আমরা তাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, উপার্জনমূলক কার্যক্রমে অবদান রেখে এবং দুর্যোগ থেকে তাদের উদ্ধার করে তাদের সাহায্য করার লক্ষ্য রাখি। এছাড়াও, আমরা বিভিন্ন গ্রীন ইনিশিয়েটিভ গ্রহণের মাধ্যমে পরিবেশে গ্রীনহাউস গ্যাস নির্গমন কমানোর কর্মসূচিও গ্রহণ করেছি।

গ্রুপ নীতি অনুসারে, প্রতি বছর, এলবিএফএল এবং এর সাবসিডিয়ারি এলবিএসএল ট্যাক্স পরবর্তী তার নিট লাভের ১% (এনপিএটি) সিএসআর- এর উদ্দেশ্যে এলবি ফাউন্ডেশনে স্থানান্তর করে।

আমরা ইতিমধ্যেই আমাদের সিএসআর নীতি সংশোধন করেছি এবং এটিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিএসআর প্রবিধানের সাথে সংযুক্ত করেছি। সংশোধিত নীতি অনুসারে, সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স কমিটির (এসএফসি) সদস্যদের একটি পৃথক সিএসআর কমিটি গঠন করা হয়েছে যা সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স ইউনিট (এসএফইউ) কে সিএসআর কার্যক্রম পরিকল্পনা, বাজেট বরাদ্দ, উন্নত সাম্প্রদায়িক স্টুয়ার্ডশিপ প্রতিষ্ঠার জন্য উল্লেখিত কার্যক্রমের বাস্তবায়ন, এবং সামগ্রিক পর্যবেক্ষণে সহায়তা করবে।

সাসটেইনিবিলিটির পথে আমাদের যাত্রা
লংকাবাংলা ফাইন্যান্স-এ, আমরা ধারাবাহিক কর্পোরেট সংস্কৃতি বজায় রেখে, আমাদের ব্যবসার প্রতিটি দিক থেকে প্রতি দিন “সাসটেইনিবিলিটি” শব্দটিকে মূল্যায়ন করি। আমরা সকল স্টেকহোল্ডারদের প্রত্যাশা পূরণে সমান গুরুত্ব দেই।

আমরা গ্লোবাল রিপোর্টিং ইনিশিয়েটিভ (জিআরআই) এর সাথে পার্টনারশিপ করে এবং এর সকল স্ট্যান্ডার্ডস বজায় রেখে, আমাদের ১ম সাসটেইনেবল প্রতিবেদন তৈরি করতে পেরে আনন্দিত।

সাসটেইনেবিলিটি রিপোর্টিং হল একটি মূল হাতিয়ার যা লক্ষ্য নির্ধারণ এবং মেটেরিয়াল প্যারামিটারে ইসিজি লক্ষ্যগুলোর আউটকাম পরিমাপ করে। কর্মসংস্থান এবং কর্মচারীদের অধিকার, প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহার, কার্বন নির্গমন, পরিবেশ সংরক্ষণ, সাম্প্রদায়িক সম্পৃক্ততা, দুর্নীতি বিরোধী,

কমপ্লায়েন্স, ইত্যাদি এলবিএফএল-এর মতো একটি সংস্থার জন্য ইসিজি লক্ষ্য হিসাবে বিবেচিত হয়।

অর্থনৈতিক চিত্র এবং চ্যালেঞ্জ- ২০২২
২০২০ সালে অর্থনীতিতে মহামারীর প্রভাব এবং অর্থনীতির অস্থিতিশীল অবস্থার সাথে আমাদের দেশ মোকাবিলা করেছে, যা আমরা ২০২১ সালেও মোকাবেলা করছি এবং আমরা লক্ষ্য করেছি বাজারের অবস্থা ধীরে ধীরে উন্নত হচ্ছে, এবং মানুষ দ্রুত আস্থা অর্জন করছে। করোনাভাইরাস মহামারী থেকে অর্থনৈতিক অবস্থার পুনরুদ্ধারের ফলে , সরকার অর্থবছর ২০২২-এ ৭.২% প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। অন্যদিকে বিশাল অবকাঠামো প্রকল্পে সরকারের মনোনিবেশ, ভবিষ্যতে বিদেশী বিনিয়োগের ক্ষেত্রে একটি ভাল ইঙ্গিত দেয়।

অর্থবছর ২০২২-এ, সরকারের কোভিড ত্রাণ ব্যবস্থায় বিনিয়োগ চালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দেশের মাথাপিছু জাতীয় আয়, অর্থবছর ২০২২-এ $২২২৭ বেড়েছে, যা গত অর্থবছরে ছিল $২,০২৪।

আনুষ্ঠানিক রেমিট্যান্স চ্যানেলে অগ্রসর হওয়ার প্রবণতা এবং অভ্যন্তরীণ রেমিটেন্সের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ২% নগদ প্রণোদনা, ২০২১ সালে রেমিট্যান্স ২২.০৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। অর্থবছর ২০২২-এ, মাইগ্রান্ট কর্মীদের নেট প্রবাহ ধীর হলে, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাগুলো সরানো হলে এবং আনুষ্ঠানিক পেমেন্ট চ্যানেলগুলোর ব্যবহার হ্রাস পেলে, রেমিট্যান্স প্রবাহের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার পুনরাবৃত্তি হওয়ার সম্ভাবনাও হ্রাস পাবে। ভবিষ্যতে, বাজেট ঘাটতি জিডিপির ৫.৫% এর উপরে অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা যাচ্ছে। ক্রমাগত ভ্যাট, আয়কর নীতি এবং প্রশাসনিক সংস্কার রাজস্ব বৃদ্ধি করবে, যদিও অবকাঠামো মেগাপ্রকল্পে মূলধন বিনিয়োগের বৃদ্ধি নিঃসন্দেহে সরকারের ব্যয় বৃদ্ধি করবে।

আমরা লক্ষ্য করেছি সাপ্লাই চেইন- এ তারতম্মের কারণে মুদ্রাস্ফীতির হার ক্রমাগত বাড়ছে,
যার ফলে বিশ্বব্যাপী দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে এবং মুদ্রার মান কমে যাওয়ার কারণে তা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বাজারের অবস্থা আগের বছরের তুলনায় যথেষ্ট লিকুইড এবং ভালো থাকা সত্ত্বেও, আমদানি ব্যয়, লোনের চাহিদা বৃদ্ধি, বিদেশী মূল্য বৃদ্ধি, এবং স্বাভাবিক অর্থনৈতিক কার্যক্রমে ফিরে আসা ইত্যাদি কারণে দেশের ব্যাংকিং খাতে লিকুইডিটির সমস্যা তীব্র হতে পারে। দেশের ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতির ফলে দেশের সাধারণ মানুষের কষ্ট অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে।

অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এবং দারিদ্র্য হ্রাসে, নিম্ন আয়ের এবং ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের জন্য বাস্তবায়ন করা নীতিগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে এই প্রত্যেকটি সমস্যাই সমাধানযোগ্য।

অন্যদিকে, আমি এই প্রতিবেদনটি লেখার সময়, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের ফলে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকট, বিশ্ব ইতিমধ্যে প্রত্যক্ষ করছে, যা বিশ্বব্যাংক, বিশ্বের জন্য একটি বিপর্যয় বলে অভিহিত করেছে এবং এর ফলে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হ্রাস পাবে বলে আশা করা যাচ্ছে, বিশেষ করে মহামারীজনিত কারণে অর্থনীতির এ ভয়াবহ সময়ে। রাশিয়া এবং ইউক্রেন বিশ্বের বৃহত্তম গম উৎপাদনকারী, (বিশ্বব্যাপী ৬০% উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন) সম্ভাবনা রয়েছে যে বিশ্ব একটি খাদ্য সংকটের সম্মুখীন হবে এবং বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পাবে।

তেল, ধাতব বস্তু, গম এর দাম দ্রুত বৃদ্ধি সহ অনেক সাধারণ আইটেম যেমন খাদ্য, পেট্রল এর দাম বৃদ্ধি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর পরিপ্রেক্ষিতে, বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের মানুষের অর্থনৈতিক মন্দার সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং বৈশ্বিক সাপ্লাই চেইন ব্যাঘাতের একটি সুযোগ আছে, যা বিশ্ব বাণিজ্যকে প্রভাবিত করবে।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত হবে যা এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে রাশিয়ান ঋণের সবচেয়ে বড় প্রকল্প, এছাড়াও যুদ্ধরত দুই দেশের জন্য তেল এবং গমের দাম বৃদ্ধির কারণে জনগণের জীবন হবে দুর্দশাময়।

তীব্র মুদ্রাস্ফীতি এবং ডিসবার্সমেন্টে সম্ভাব্য হ্রাসের সম্ভাবনা, ২০২১ সালে মহামারী চলাকালীন অর্জিত অগ্রগতির ব্যাঘাত, সরকারী ব্যয় হ্রাসের কারণে নতুন বাজার পরিস্থিতি, লংকাবাংলার ক্রমবর্ধমান এবং বিদ্যমান লোনের ক্ষেত্রে বাঁধার সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি করে।

অর্থনৈতিক দৃশ্যপট পরিবর্তনের জন্য এলবিএফএল- এর স্ট্রাটেজি
২০২০ সালে মহামারীতে আক্রান্ত হওয়ার পর, একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হল, হাব এবং স্পোক মডেলে রোল আউট করা ছাড়া আর কোনও বিকল্প নেই। আমরা বৃহত্তর ভৌগলিক রিচ নিশ্চিত করে বাজারে প্রবেশ করার লক্ষ্য রাখি এবং আমরা এসএমই ব্যবসার উপর জোর দিতে চাই। কোম্পানিকে ডিজিটালভাবে রূপান্তরিত করার এবং ডিজিটাল চ্যানেলের মাধ্যমে মানসম্পন্ন গ্রাহক সেবা প্রদানের জন্য ক্রমাগত প্রচেষ্টা রয়েছে। ভবিষ্যতে একটি ফিনটেক কোম্পানিতে পরিণত হওয়ার আকাঙ্খা নিয়ে, এসএমই অ্যাপ্লিকেশন অটোমেশন, একপে বিল পেমেন্ট এবং প্রান্তিক এর প্রচার (লোন, ডিপিএস এবং ক্রেডিট কার্ড সুবিধা সমন্বিত একটি ডিজিটাল পণ্য) বর্তমান এবং ভবিষ্যতের প্রকল্পগুলোর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এর থেকে সংগৃহীত আমাদের মূল ফোকাসগুলোর মধ্যে একটি হল রিটেল সম্পদ বৃদ্ধির পাশাপাশি একটি এসএমই-নেতৃত্বাধীন সম্পদ বৃদ্ধি করা।

এনপিএলগুলো গ্রহণযোগ্য মাত্রায় হ্রাস করার জন্য ব্যবসায়িক বিভাগ থেকে একটি কঠোর পর্যবেক্ষণ এবং সংগ্রহ প্রক্রিয়া পরিচালিত করা হবে, যার ফলে সম্পদের গুণমান উন্নত হবে, যা বাংলাদেশ ব্যাংকের লোন বিধান নীতির কারণে সামান্য হ্রাস পেয়েছে। এলবিএফএল-এ আমরা আমাদের মানবসম্পদকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে যেমন জব রোটেশন, নন ভ্যালু এডেড পজিশন নির্মূল করে এবং নতুন ভ্যালু এডেড পজিশন তৈরি করে, সাংগঠনিক কাঠামো পর্যালোচনা এবং নতুনভাবে ডিজাইন করে থাকি। দক্ষতা এবং উৎপাদনশীলতা নিশ্চিত করতে, আমরা চাকরির মূল্যায়নের জন্য HAY(এইচএওয়াই) পদ্ধতি বাস্তবায়ন করতে চাই।

আমরা যখন একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে চিন্তা করছি, তখনই দেশের মানুষের জন্য আবার দুর্দশা হয়ে আসে কোভিড-১৯ এর আরেকটি ভ্যারিয়েন্ট, ওমিক্রন। একটি জাতি হিসাবে আমরা ক্রমাগত টিকে থাকার চেষ্টা করছি কারণ আমরা কোভিড-১৯ এর দুঃসময় পাড় করে এসেছি। এ অবস্থায় লিকুইডিটি ব্যবস্থাপনা অব্যাহত রাখাই আমাদের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু। আমরা যুক্তিসঙ্গত হারে দীর্ঘমেয়াদী তহবিলের উপর ফোকাস করতে চাই, এর পাশাপাশি লিকুইডিটির চাহিদা নিশ্চিত করতে কয়েক মাস বাফার তহবিল বজায় রাখতে চাই।

পুঁজিবাজারের প্রবণতা সম্পর্কে আমাদের জ্ঞান এবং সফলভাবে বুলিশ পুঁজিবাজারকে অপ্টিমাইজ করা, এই বছরের আয়ের একটি বড় অংশ নিয়ে এসেছে, ন্যূনতম ঝুঁকি নিয়ে সর্বোচ্চ রিটার্ন নিশ্চিত এবং সরকারী সিকিউরিটিজে মাঝারি স্তরের বিনিয়োগ নিশ্চিত করার মাধ্যমে আমরা আমাদের লিকুইডিটির চাহিদা নিয়ন্ত্রণে রাখব।

কৃতজ্ঞতা

সকল স্টেকহোল্ডারদের অটল সমর্থন আমাদের দীর্ঘমেয়াদী প্রবৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যায়, দীর্ঘমেয়াদী স্থায়িত্ব এবং বৃহত্তর অর্জনে আমাদের আস্থা বৃদ্ধি করে। আমি পরিচালনা পর্ষদ, ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য এবং আমাদের কর্মীদের অবদানের প্রশংসা করি। পরিশেষে, লংকাবাংলার বিনিয়োগকারী, বিশ্বস্ত গ্রাহক এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের সমর্থন ছাড়া এর কিছুই সম্ভব হতো না। আমরা পারস্পরিক সমৃদ্ধি এবং অর্জনের যাত্রায় অনুপ্রাণিত, এবং আমরা আশাবাদী, ভবিষ্যতে যেকোনো প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলায় একসঙ্গে কাজ করতে আমরা সক্ষম।

ধন্যবাদ!
খাজা শাহরিয়ার
ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং সিইও

ইনভেস্টর রিলেশনস
বিভাগ

মাসুম আলী

সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট, বোর্ড সেক্রেটারিয়েট ও রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স

  • ঠিকানা : সাফুরা টাওয়ার, লেভেল-১৪, ২০ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ বনানী, ঢাকা ১২১৩
  • ফোন : +880 2 9883701-10, Ext 402
  • সেল : +88 01713 069817
  • ফ্যাক্স : +880 2 8810998
  • ই-মেইল : masum@lankabangla.com